ভূকা ১৭ : অভিশাপ

খুবই একরোখা স্বভাবের ছিলেন আমাদের তানিয়া খালামনি। তবে পরিচিত জনের কাছে অনেক বেশি উচ্ছল ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে যেন উনার কি হয়ে গেল! কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। কারো সাথে তেমন একটা কথাও বলেন না।
কিছুদিন পর হঠাৎ উনার হাত পা ফুলে যেতে লাগলো। তাই উনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন আমার মামা। ডাক্তার অনেক কিছুই পরীক্ষা করতে দিলেন কিন্তু কিছুই ধরতে পারলেন না। ধীরে ধীরে উনার অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হতে লাগলো। অনেক ডাক্তার দেখানো হল কিন্তু কেউই কিছু ধরতে পারলেন না। এদিকে তানিয়া খালামনি দিনকে দিন আর বেশি নিস্তেজ হয়ে পড়তে লাগলেন। সারাদিন শুধু কান্নাকাটি করতেন।

 তানিয়া খালামনি এর কিছুদিন পর মারা যান।

 মারা যাওয়ার কয়েক মাস আগে উনার গায়ের চামড়া খসে খসে পড়া শুরু করে। উনার পুরো শরীর এক বীভৎস রূপ নেয়। বাড়ির সকলে এই ব্যাপারে অনেক বেশি চেষ্টা করেও কিছু জানতে পারেনি। অবশেষে, ১২ই ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
তানিয়া খালামনি মারা যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর, যখন মোটামুটি সবাই তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা ভুলতে বসেছে তখন তার মৃত্যুর আসল রহস্য উন্মোচিত হয়। তানিয়া খালামনির ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। মৃত্যুর কারনটা জানা যায় সেই ডায়েরি পড়ে। সেটায় স্পষ্ট ভাবে লেখা ছিল সব। তানিয়া খালামনি লিখেছিলেনঃ

“.........আজ আমি বিরক্ত হয়ে একটা বিড়ালের গায়ে গরম পানি ঢেলে দেই। কিন্তু, আশ্চর্যের ব্যাপার হল, দুপুরে ঘুমানোর সময় আমি বিড়ালটাকে স্বপ্নে দেখতে পাই। বিড়ালটা আমাকে ৪ টুকরো আপেল খেতে দেয়, কিন্তু, এক টুকরো খেয়েই আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।”

“.........আজ আবার বিড়ালটা আমার স্বপ্নে এসেছিলো। আমি যেন শুনতে পাই যে ওটা স্পষ্ট ভাষায় বলছে, “আমাকে যেভাবে কষ্ট দিলি, তোকেও সেভাবে কষ্ট পেতে হবে।”এরপর বিড়ালটি তার আকার পরিবর্তন করে খুব ভয়ঙ্কর একটা রূপ নেয়।”


ডায়েরিতে এতটুকু পর্যন্ত লেখা ছিল।

ডায়েরির উপরের ঘটনাটুকু পড়ার পর কারোই আর বুঝতে বাকি থাকে না যে, ঐ বিড়ালটা কোন সাধারন বিড়াল ছিল না। বরঞ্ছ অশরীরী টাইপের কিছু ছিল। গরম পানি ঢেলে দেয়ায় বিড়ালটার গায়ের চামড়া যেমন খসে খসে পড়ে, তেমনি তানিয়া খালামনির গায়ের চামড়া ও খসে খসে পড়েছিল।


::সংগৃহীত::