আজকে বলব আমার নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সত্যি ঘটনা। যারা মোবাইল অপারেটর বা তাদের ভেন্ডর কোম্পানিগুলোতে কাজ করেন, তারা জানেন যে নেটওয়ার্কের মেইনটিনেন্সের জন্য প্রায়ই রাতে কাজ করতে হয়। রাতের এ কাজকে 'প্ল্যান্ড ওয়ার্ক' বলা হয়। আমি যেহেতু একটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের অপারেশন্সে কর্মরত আছি, তাই আমারও অনেক সময় রাতে 'প্ল্যান্ড ওয়ার্ক' থাকে। 'প্ল্যান্ড ওয়ার্ক' থাকলে সারারাত কাজ করে সকালে বাসায় ফিরি।
মধ্যরাতে কুমিরা রেলস্টেশনে
প্রথম দেখা ভূত
আমি যখন ছোট ছিলাম কখনোই বাবা-মাকে ছাড়া ঘুমাতাম না। এভাবে প্রায় ৮ বছর পর্যন্ত বাবা-মার সাথেই ঘুমিয়েছি। আর ভূত দেখার পরে তো বাবা মার সাথে না থাকার প্রশ্নই থাকে না।
যাদুবিদ্যা ও ডাইনীতন্ত্র!!
যাদুবিদ্যা ও ডাইনীতন্ত্র!!
বিশাল ভৌতিক গবেষণা
১। মোহিনী - এটা একটা পেত্নী। এরা সাধারণত: সেই সব মেয়েদের আত্মা যারা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বিয়ের আগেই আত্মহত্যা করেছে। এরা সুন্দর সুন্দর ছেলেদের মোহিত করে নিয়ে যায় এবং তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এরা খুব প্রতিশোধপরায়ণ!
পুরোটাই লম্বা লম্বা পশমে ভর্তি
নাফিস উজ্রাত নামের আমার একটি বন্ধু ছিল যে জানালার পাশে শুতে খুব পছন্দ করত। জানালার পাশে শুলে জানালা দিয়ে বাতাস আসে, ঘুমটা ভালো হয়। তার বড় ভাই কিরণ কুমারও জানালার পাশে শুতে চাইতো। তাই প্রতি রাতেই তার বড় ভাইয়ের সাথে সে মারামারি করতো জানালার পাশে শোবার জন্য।
একদিন রাতে নাফিস উজ্রাতের বড় ভাই কোন এক কারণে বাসায় ছিল না। তাই সেদিন সে একাই ঘুমাতে আসে।
জানালাটি খোলা ছিল, আর নাফিস উজ্রাত জানালার ঠিক পাশেই শুয়ে ছিল। মাঝ রাতে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। তার মনে হল যে কোন একটি হাত তার বুকের উপর রয়েছে। যেটি নাফিস উজ্রাতের বুকের উপর হাত বুলিয়ে যাচ্ছে।
নাফিস উজ্রাতের রুমের ডিম-লাইটটি জ্বালানো ছিল। সে চোখ মেলে হাতের মত কিছু একটা দেখতে পেলো। হাতটি সাধারণ মানুষের হাতের চেয়ে দিগুণ। পুরোটাই লম্বা লম্বা পশমে ভর্তি। হাতের মত জিনিসটা তাকে জানালার দিকে টানা শুরু করলো। নাফিস উজ্রাতরা থাকতো ৪ তলায়। সেখানে কোন মানুষে উঠার কথা না।
নাফিস উজ্রাতের মুখ দিয়ে তখন কোন শব্দ বের হচ্ছিল না।
টানা টানি করতে করতে এক পর্যায়ে নাফিস উজ্রাতের হাত জানালার গ্রিলের বাইরে নিয়ে গেল। এবং খুব জোরে জোরে হেচকা টান মারতে লাগলো যেন সেই হাতটি তাকে এই গ্রিলের ছোট ছোট ছিদ্র দিয়েই বের করে নিয়ে যাবে।
নাফিস উজ্রাত জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।
বড় ভাই কিরণ সকালে এসে নাফিস উজ্রাতকে উদ্ধার করে। জানালার গ্রিল থেকে বের করার পর তার হাত এবং পা বেঁকে গিয়েছিল। যেটি ভাল হতে অনেক দিন লেগেছিল।
খুব সম্ভবত একারণেই পরে নাফিস উজ্রাত ভালো একজন ফুটবলপ্লেয়ার হয়।
বোবায় ধরা
বেশ কিছু দিন আগের কথা, আমি তখন ঢাকায় খুব ছোট একটা রুমে একাই থাকতাম। প্রায় সময় আমি রাতে রেডিওর বিভিন্ন প্রোগ্রাম গুলো শুনতাম।
সেই দিন আমি রাতে ভুত এফএম শুনছিলাম। খুবি ভয়ংকর একটা গল্প শোনাচ্ছিল। শুনতে শুনতে হঠাৎ আমার কাছে কেমন যেন মনে হচ্ছে। আমি আর আমার হাত, পা এবং কি আমার শরীরের কোন অংশই যেন আর নড়াতে পারছিনা। মুখ দিয়ে যে কাউকে ডাকবো সেই কাজটাও করতে পারছিনা। অনেক সময় ধরে ঐ অবস্থায় থাকতে হল।
বারবার মানে হচ্ছিন আমাকে মনে হয় ঠিক জীনে ধরেছে। প্রায় ২০ মিনিটের মত হবে। আবার আমি সেই আগের মত সাভাবিক হয়ে গেলাম। পরে আর সেদিন রাতে ঘুমাতে পারলাম না।
এরপরে আমি বিভিন্ন ভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, এবং অবশেষে আমি বের করতে পারলাম এই রকম হলে এটা থেকে বাঁচার সহজ উপায়।
এই সমস্যাটাকে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস। সহজ বাংলায় আমরা যাকে বলি বোবায় ধরা।
কঙ্কাল কানাবেল
......:::::: কঙ্কাল কানাবেল ::::::......
স্টেশনের লোহার গেটটা এক ধাক্কায় খুলে দৌড় দিলাম টিকিট কাউন্টার এর দিকে। অনেক রাত হয়ে গেছে, ট্রেন পাব কিনা জানিনা। টিকিট কাউন্টারের সামনে যেয়ে হতাশ হতে হল আমকে।
বন্ধ।
কিন্তু কিছু করার নাই আমার, এইখানে অপেক্ষা করা ছাড়া।
একটা টুল দেখে বসে পড়লাম সেখানে।
আজকে সকালেই জয়দেবপুর এসেছি এক বন্ধুর বাসায়, সেইখান থেকে রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে স্টেশনে ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় সাড়ে বারোটা বেজে গেল। এখন উল্লুকের মত বসে থাকা ছাড়া কোন উপায় নাই। কখন ট্রেন আসবে কে জানে। বসে থাকতে থাকতে একটু ঝিমুনি এসে গেছিল।
হঠাৎ কানের কাছে কে যেন চিৎকার করে উঠল “ পেয়ে গেছিরে”।
চিৎকার শুনে ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম আমি। এবার আমার চিৎকার দেওয়ার পালা। দেখলাম কিম্ভূতদর্শন দুইটা কঙ্কাল আমার সামনে দাঁড়ানো।
“ কি ভেবেছিলিরে টংরা, তুই লুকিয়ে থাকলে আমরা তোকে খুঁজে পাবনা?” একটা কঙ্কাল বলে উঠল।
“ টংরা কে”, বললাম আমি, ভয়ে ঘেমে উঠেছি।
“কে আবার , তুই টংরা। তাড়াতাড়ি চল, দেরি হয়ে যাচ্ছে যে”, বলল অন্য কঙ্কালটা। এই কঙ্কালটার আবার একটা পা নাই।
“ কোথায় যাব?”
“ যেন কিছু বোঝেনা, তোর আজকে বিয়ে না, তাড়াতাড়ি চল।”
“ বিয়ে!”, চমকে উঠলাম আমি “কিসের বিয়ে, কার বিয়ে?”, গলা দিয়ে ফ্যাস ফ্যাস আওয়াজ বের হল।
“তোর বিয়ে, বট গাছের পেতনীর সাথে। বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে আসলি, আর এখন কিছু বুঝতে পারছিস না?”, বলল এক পায়াটা।
“আমি তো মানুষ, আমার পেতনীর সাথে বিয়ে হয় কিভাবে? ”, বললাম আমি।
“কে বলল তুই মানুষ, মড়া মানুষের ভিতর লুকালেই মানুষ হয়ে যায় নাকি?”
“মড়া মানুষ? আরে মড়া পাচ্ছেন কোথায়, আমি তো জলজ্যান্ত মানুষ, দেখছেন না? মরলে আমি টের পেতাম না? ”
খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে উঠল একপায়াটা।
“ওরে, মানুষ কখন মরে তা কি সে টের পায়?” বলল সে।
“সে কি তাহলে কি সত্যিই আমি মরে গেছি?” চমকে উঠলাম আমি।
“হ্যারে হ্যা, তুই মরে গেছিস রে, আর আমাদের টংরা তোর পেটের মধ্যে থেকে কথা বলছে।”
চোখে পানি চলে আসল আমার। হায়, জীবনে তো ধরতে গেলে এখনও কিছুই দেখিনি। প্রেম করিনি, নাইট ক্লাবে যাইনি। সবইতো এখনও করা বাকি।
শেষ পর্যন্ত কিনা এভাবে বেরসিকের মত মরলাম?
“যেতে কি হবেই?”, একটু ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
“ হবে না আবার?”, ধমক দিল প্রথম ভূতটা “ তোর না গায়ে-গু হয়ে গেছে।”
“গায়ে গু আবার কি?”
“মানুষের যেমন গায়ে হলুদ হয়, তেমনি আমাদের হয় গায়ে গু, কিছু বুঝিস না?” বলল প্রথম কঙ্কাল টা।
হায়, সব আশা বুঝি শেষ। শেষ পর্যন্ত বোধহয় আমকে বট গাছের পেতনীকেই বিয়ে করতে হবে। বট গাছের পেতনী দেখতে কেমন হবে কে জানে? তবু ও একটা শেষ চেষ্টা করা যাক।
“ দেখুন আমি বোধহয় মরিনি, আমকে ছেড়ে দিন”, বললাম আমি।
“ কোন ভূত যখন কোন মড়ার ভিতরে ঢুকে পরে, তখন সেই মড়াটার চেহারা সেই ভূতটার মতো হয়ে যায়। দেখনা, তোর চেহারাও টংরার মতো কেমন অকুৎসিত হয়ে গেছে।”, বলল একপায়াটা।
চেহারা আমার ভালোনা, এটা ঠিক। তাই বলে এমন অপমান? আমাকে বলে অকুৎসিত? মানে কুৎসিতের চেয়েও কুৎসিত?
“ দেখেন ভাল হচ্ছেনা কিন্তু। আমি কোন টংরা ফংরা না”, একটু ঝাঁঝের সাথে বললাম আমি।
“তুই যে টংরা না মানুষ, তার কোন প্রমাণ দিতে পারবি?”
প্রমাণ? একটু ভাবলাম আমি।
“হ্যা পারব।”, বললাম আমি।
“কি প্রমাণ?”
“আমি কবিতা লিখতে পারব। আপনাদের টংরা কি কবিতা লিখতে পারে?”
“ কবিতা?” আবার খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসল একপায়াটা। “কবিতার নাম শুনলেও তো আমাদের টংরা অশ্বথ গাছে উঠে পালায়। ”
“ব্যাস, এইতো প্রমাণ হয়ে গেল যে আমি টংরা না” খুশিতে চেঁচিয়ে উঠলাম আমি।
“আগে প্রমাণ কর তুই কবিতা লিখতে পারিস, তারপর বুঝব”, বলল প্রথম কঙ্কালটা, “তোর কবিতা কখনও ছাপা হয়েছে?”
“আমার কবিতা এতটা উচ্চমানের, যে সেটা ছাপালে অন্য কবিরা আর সুযোগ পাবে না। তাই ছাপা হয়নি। একজন সম্পাদক নিজের মুখে আমাকে একথা বলেছেন।” গর্বের সাথে বললাম আমি।
“দেখি লেখতো একটা কবিতা। আমার নাম নিয়ে একটা কবিতা লেখ।”, বলল প্রথম কঙ্কালটা।
“নাম কি আপনার?” জিজ্ঞেস করলাম আমি।
“কানাবেল”, বলল প্রথম কঙ্কাল টা।
“আহা, নামের কি বাহার!”, মনে মনে বললাম আমি।
যাই হোক ব্যাগ থেকে কাগজ কলম নিয়ে বসে গেলাম কবিতা লিখতে।
কিছুদূর লেখার পর জিজ্ঞেস করল কঙ্কালটা, “কিরে লেখা হল?”
“হ্যা শেষ।”
“পড়তো দেখি।”
একটু গলা খাঁকারি দিয়ে পরতে শুরু করলাম আমি,
“তেল আছে, টেল আছে
আর আছে কদবেল,
মেল আছে, জেল আছে
আর আছে পাস ফেল।
খুন আছে, চুন আছে
আর আছে বানডেল
সবচেয়ে মহান হল
কঙ্কাল কানাবেল।”
“ বাহ বাহ”, আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠল কানাবেল।
“তাহলে প্রমাণ হলোতো যে আমি টংরা না?”, জিজ্ঞেস করলাম আমি।
কি যেন বলতে যাচ্ছিল কানাবেল, কিন্তু তার আগেই চিৎকার করে উঠল একপায়াটা, “পেয়েছি পেয়েছি টংরাকে, ওই যে অশ্বথ গাছের উপরে।”
কানাবেল আর একপায়া দৌড় দিল গাছটার দিকে।
আমিও একছুটে স্টেশন পার হয়ে শহরের দিকে ছুটলাম।
কুচিসাকে ওন্না
কুচিসাকে ওন্নাঃ
এই নামের অর্থ হচ্ছে ‘ওমান উইথ স্প্লিট মাউথ’/ মুখ কাটা যে নারীর। জানা মতে, এই নারীকে গভীর রাতে একলা চলতি পথে দেখা যায়। তার পরনে থাকে ট্রেঞ্চ কোট এবং মুখ ঢাকা থাকে সার্জিকাল মাস্কে। একলা কাউকে পেলে হুট করে সামনে এসে জিজ্ঞেস করে, ‘আমি কি দেখতে সুন্দর?’ যদি উত্তর না হয় তবে সে কাচি দিয়ে মাথা কেটে ফেলে। আর যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তবে সে তার সার্জিকাল মাস্কটি সরিয়ে তার এক কান থেকে অন্য কান পর্যন্ত কাটা মুখ দেখিয়ে বলবে, ‘এখন?’ আপনার উত্তর না হলে মরতে হবে এবং উত্তর হ্যাঁ হলে তার নিজের মতো কাটা দাগ সে পথিকের মুখে তৈরি করে দিয়ে যাবে।বোতলে জ্বিন বন্দী
আমার নানা পাকিস্তান আমলের একজন ঠিকাদার ছিলেন।সাথে সাথে বোতলে জ্বিন বন্দীর দক্ষতা থাকার কারনে তাকে গ্রামের লোকজন ফকির নামে চিনত।এই কাজ টি অত্যন্ত ঝুকিপুর্ণ।জ্বিন যদি কোনভাবে ছাড়া পেয়ে যায়,তাহলে আমাদের সমূহ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।কিন্তু নানা সচেতন থাকার কারনে সেই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।নানা বলেছিলেন,তিনি খুব অল্প সংখ্যক জ্বিন কেই বোতলে পুরেছেন।এটি একটি সাধনার মত এবং সাধারনত সুরা পড়ার মাধ্যমে করা হয়।বলা হয়ে থাকে,এই পদ্ধতিতে শুধু বদ জ্বিন রাই কাবু হয় যারা অকারণে কারো ওপর চড়াও হয় কিংবা মেয়ে দের ওপর ভর করে।প্রত্যেক জ্বিন ই বোতলে বন্দীর পর ছেড়ে দেয়ারজন্যে আকুতি মিনুতি করত,নানা সবাইকেই তওবা করিয়ে ছেড়ে দিত।তবুও নানা গ্রামে গেলে খুব সতর্ক থাকতে বলতেন।বলাবাহুল্ য কিছু কথা উল্লেখ করা যেতে পারে,