অভিশপ্ত দ্বীপের গল্প
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি দ্বীপ গাইওলা। ইতালির নেপলস নামক এলাকায় অবস্থিত এই দ্বীপটি। এটি দেখলেই আপনার ভালো লেগে যাবে। মনে হবে অবকাশ যাপনের জন্য কিংবা কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নেয়ার পর বাকি জীবন শান্তিতে কাটিয়ে দেয়ার জন্য দারুণ একটা জায়গা এটি।
তবে এই দ্বীপের কাহিনী শুনলে পাল্টে যাবে আপনার ধারণা। আজ পর্যন্ত এই দ্বীপটি কিনে কেউ বেঁচে থাকতে পারেননি। কোনো না কোনোভাবেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মারা গেছেন অথবা আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সর্বহারা হয়েছেন তারা।
এই দ্বীপের স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারবেন আরো অনেক কিছুই। স্থানীয় অধিবাসীদের ভাষায় ভয়াবহভাবে অভিশপ্ত এই দ্বীপ। তারা জানান, এখন পর্যন্ত যতজন এ দ্বীপের মালিকানা লাভ করেছেন ততজনই মারা গিয়েছেন আকস্মিক ও অপঘাতে অথবা হয়েছেন আর্থিকভাবে দেউলিয়া।
১৯২০ সালে মারা যান এই দ্বীপের প্রথম মালিক। তখন থেকেই শুর হয় ঘটনা। দ্বীপের মালিক সুইজারল্যান্ডের একজন নাগরিক ছিলেন। যার নাম হ্যানস ব্রাউন। তিনি কয়েক বছর এই দ্বীপে বাস করেন। তারপর একদিন হ্যানসকে পাওয়া গেল মৃত অবস্থায়। তখন তার দেহ ছিল কার্পেট দিয়ে মোড়ানো। এর কয়েক মাস পরেই হ্যানসের স্ত্রীও সাগরের পানিতে ডুবে মারা যান। এভাবে দ্বীপটি অভিশপ্ত হয়ে ওঠে।
একের পর এক মারা যেতে থাকেন নতুন মালিকরা। প্রথম মালিকের মৃত্যুর পরে দ্বীপের পরবর্তী মালিকানা লাভ করেন একজন জার্মান ব্যক্তি, যার নাম অটো গ্রানব্যাক। তিনি নিজের ভিলাতেই আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
তবে ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। এর পর মালিকানা গ্রহণ করেন মরিস ভেজ স্যান্ডোজ। যিনি একটি মানসিক হাসপাতালে আত্মহত্যা করেন।
এর পরে দ্বীপের মালিক হন জার্মানির ইস্পাত শিল্প মালিক ব্যারন কার্ল পল ল্যাঙ্গহেইম। তিনি তার বেহিসেবী আচরণের কারণে খুব শিগগরিই দেউলিয়া হয়ে যান, ধনকুবের থেকে পরিণত হন পথের ফকিরে। পরবর্তী মালিক জীয়ানই আগনেলির বহু আত্মীয় অস্বাভাবিকভাবে মারা যান।
এর পরের মালিক পল গ্যাটিকের নিজের নাতিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা, যার খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। দ্বীপটির সর্বশেষ মালিক জীয়ান প্যাসকেল গ্র্যাপোনকে পুলিশ আটক করেন।
এসব বহু ঘটানার জন্ম দেয়া এ দ্বীপের অভিশাপের কথা আলোচনায় আসে ২০০৯ সালে। ফ্র্যাঙ্কো এম্ব্রোসিও ও তার স্ত্রী জিওভান্নো সাচো খুন হন। এরা এ অভিশপ্ত দ্বীপের বিপরীতে একটি ভিলা বসবাসের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন।