হোস্টেলের ভূত

 হোস্টেলের ভূত

আমার এক বন্ধুর ফুফাত ভাই সিহাব খুলনায় থেকে লেখাপড়া করে। ভার্সিটি পরার সুবিধার জন্য ওনাকে হলে থাকতে হয়। বর্তমানে মজিদ হলে থাকলেও আগের হলে তার সাথে যা ঘটেছে তা আজ শেয়ার করছি~
* হল বললে ভুল হবে ওটা ছিল একটা ম্যাচ হোস্টেলের মত। তারা বেশ কিছুজন ঐ ম্যাচে থাকত। বাড়িটা দেখলে নতুন মনে হবে কারন পেইন্ট করে পুরনো বাড়িটাকে নতুন করা হয়েছে। বলে রাখা ভালো ভাইয়ার রুমে ঢোকার দরজা এমন যে আগে রুমের একটা জানলা পড়ে যেটা দিয়ে রুমের ভেতর সম্পূর্ণ খুব ভালভাবে দেখা যায়। তো একদিন দুপুর বেলা ভাইয়া গোসল করে রুমে ঢোকার সময় একবার ভিতরে তাকান। দেখতে পান তার বেডে কেউ একজন শুয়ে বই পড়ছে। কিন্তু রুমে ঢুকে দেখেন তার বেডে কেউ নেই। পাশের বেডের ছেলেকে জিজ্ঞেস করায় সে বলল তার বেডে কেউ ছিলনা।
ঘটনা এখানেই শেষ হলে বলা যেত ভাইয়া চোখে ভুল দেখেছে কিন্তু অবাস্তব ঘটনা আরো ঘটতে থাকে।
* ওই ঘটনার কিছুদিন পরে অন্য রুমের দুই অনার্স পড়ুয়া বড় ভাই এই ধরনের ঘটনার মুখমুখি হন। ওইদিন রাতে আনুমানিক রাত ২.০০ বা ২.৩০ এর দিকে ঐ রুমের এক ভাইএর ঘুম ভেঙে যায় একটা বিশ্রী শব্দে। ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে ডিম লাইটের আলোয় দেখতে পান তাদের খাটের ঠিক সামনে একটা ছোট মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঊনি অনেক কষ্টে তার ভয় দূর করে তার পাশে শোয়া অন্য ভাইকে জাগানোর জন্য পাশ ফেরেন। পাশের ভাইকে জাগিয়ে ঊনি পাশ ফিরে দেখাতে যাবেন মেয়েটাকে। কিন্তু বিস্ময়ের সীমা ছাড়িয়ে যায় যখন দেখেন ওখানে কেউ নেই!!
আগের ঘটনার পরে ভাইয়া ঐ হোস্টেলের দারোয়ানের কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনিও স্বীকার করেন ঐ হোস্টেলে কিছু আছে।দারোয়ানের ভাষ্য মতে
* তিনি এক রাতে হটাত উপর তলায় গুম গুম শব্দ শুনতে পান। তার এক ছোট ভাই তার সাথে ঘুমায়। সেও একই শব্দ শুনতে পায়। তার রুম টা উপরতলার বাথরুমের ঠিক নিচে। উনি ভাবল কেউ হয়ত বাথরুমে গেছে। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ শব্দ চলতে থাকায় উনি উপরে যান দেখতে।তার ছোট ভাইকে রুমেই রেখে যান। কারেন্ট না থাকাই একটা টর্চ হাতে নিয়ে যান। বাথরুমে ঢুকে তেমন কিছু দেখতে না পেয়ে উনি নিচে ফেরার জন্য যেই সিড়ি পর্যন্ত গেছেন অমনি শব্দ আবার হতে থাকে। টর্চ হাতে তিনি আবার বাথরুমে যান। হলের বাথরুম সাধারনত বড় হয় অর্থাৎ অনেক গুলো টয়লেট একসাথে।লাইট মেরে উনি দেখেন সব দরজা গুলো খুলছে আর বন্ধ হচ্ছে। ভয় পেয়ে উনি নিচে দৌড়ে চলে আসেন। নিজের রুমে ঢুকে দেখেন একটি ছোট মেয়ে তার ভাই এর সামনে দাড়িয়ে আছে। আর তার ভাই নির্বিকার ভাবে ঐ মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। উনি সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
সকালে তার ও তার ভাইকে সবাই তাদের রুমে অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে পায়। সবাইকে সবকিছু বললেও অনেকেই তার কথা বিশ্বাস করেনি। এটা ওই হলের অনেক আগের ঘটনা।
* আবার ভাইয়ার সাথে অন্য এক রাতে আরেকটি ঘটনা ঘটে ঐ বাথরুমে। ঐ রাতে আনুমানিক ৮.০০ বা ৯.০০ এর দিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা থাকায় সবাই নিচে যায় খেলা দেখতে। ভাইয়া টয়লেটে ঢুকে দরজাবন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পরে উনি টের পান দরজার সিটকিনি খোলার খুটখুট শব্দ। বাথরুমের লাইটগুলো বেশিরভাগ ই ফিউজ। একটা লাইট দিয়ে কাজ চালাতে হয়।
ঐ লাইটের আবছা আলোতে তিনি দেখতে পান দরজার সিটকিনি অটোমেটিক খুলে যাচ্ছে। ভাইয়া উঠে দরজার শিটকিনী তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেন। ভাইয়া ভাবেন হয়ত মনের ভুলে দেখেছেন ওটা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে একই কান্ড আবার শুরু হয়। ভাইয়া আবার বন্ধ করে দেন। তৃতীয় বার তিনি তাড়তাড়ি কাজ সেরে টয়লেট হতে বের হয়ে যান। এই সব ভয়ানক ঘটনার পরে আর বেশিদিন ঐ হলে থাকেনি ভাইয়া।