ভূতুড়ে কাহিনী ৮৭: সূরা আল জিন

আমরা তখন খুলনা তে থাকতাম , আমি তখন ক্লাস ৮ এ পড়ি !

ফ্যামিলি ইসলামিক মাইন্ড এর হওয়ার কারনে আমাকে ওই টাইম

এ হুজুর কুরআন শরীফ পড়াতে আসতো , কুরান শরীফ খতম

দেয়ার জন্য। একদিন কুরআন পড়তে গিয়ে সুরাহ জীনদেখতে

পেলাম ! আমি হুজুর কে জিজ্ঞাস করলাম এই সুরাহ তার নাম

জীনকেন? হুজুর আমাকে বলল যে, এই সুরাহ তে জীন যে

পৃথিবীতে আছে এবং জীন এর পূর্ন বিবরণ এই সুরাহ তে দেয়া

আছে। আমি আমার লাইফ এ কখনই ভূত তুত বিশ্বাস করতাম

না। কিন্ত কুরআন এ যেহেতু জীন এর কথা বলছে তো বিশ্বাস না

করে থাকা যায়না।কিন্ত এর পরে হুজুর যা বলল, সেটা আসলে আমাকে সেইদিন না

বললেই ভাল ছিল । হুজুর আমাকে বলল এই সুরাহর একটা

জিনিস আছে সেটা হচ্ছে যে যে এই সুরাহ টা ৪০ দিন

পড়বে একা, তার থেকে ৪০ দিন পর জীন দেখা দিবে।আমি মনে মনে ঠিক করলাম সেইদিন থেকেই সুরাহ জীন পড়া

শুরু করব। কিন্ত সেটা যে আমার কত বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তা

পরে টের পেয়েছি।প্রতিদিন রাতে এশার নামাজ পড়ে যখন বাসায় আসতাম, ঠিক

তখনি আমার ঘরের লাইট নিভিয়ে চাঁদের আলোতে আমি সুরাহ

জীন পড়তাম। এভাবে করে ঠিক ঊনচল্লিশ দিন চলে গেলো। সব

কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু যখনি আমি সুরাহ জীন পড়তাম, তখনি

আমার শরীরের লোম সব কেন জানি খাড়া হয়ে যেত। সে সময়

মনে হতো কেউ যেন আমায় পেছন থেকে দেখছে। চল্লিশ দিনের

রাতের ঘটনা। এশার নামাজ পড়ে বাসায় আসলাম। ঠিক ওই

সময় আমি যখন কুরআন শরীফে সুরাহ জীন পড়া শুরু করলাম,

সেই সুরাহ শেষ হতে বাকি ছিল মাত্র আর এক পেইজ। ঠিক ওই

সময়ে ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো। খুব বড় একটা শব্দ শুনলাম।ধারণা করলাম ট্রান্সফরমার ব্রাস্ট হয়েছে সম্ভবত। আমার

ধ্যান-ধারনা তখন সব ওই সুরাহতে। আর কোনো দিকে মন নেই।

পড়ছি; আর দুলাইন বাকী। চাঁদের আলোয় জায়নামাজে বসে

পড়ছি। যেই সুরাহটা পড়ে শেষ করলাম, আমার গায়ে জানালা দিয়ে আসা

একটা মৃদু হাওয়া অনুভব করলাম। যেটাতে আমার শরীরের সব

লোম খাড়া হয়ে গিয়েছিলো। এবং হঠাৎ আমি কেঁপে উঠলাম কেন

যেন। হঠাত করে দেখতে পেলাম ঘরে আমার ঠিক সামনে চাঁদের

আলো থেকে একটু একটু করে আলো দেয়ালের দিকে সরে

আসছে; সেটা আস্তে আস্তে মানুষের একটা রূপ নিচ্ছিল। আসলে

মানুষের আকারে বললে ভুল হবে, কেননা সেটার আকৃতি ছিল নয়

ফিটের মতো। হঠাৎ করে শুনলাম কে যেন খুব ভারী একটা গলায়

বলে উঠল আমাকে কেন ডেকেছিস? বল, তুই কী কারনে

আমাকে ডাকলি?” আমি এটা দেখার এবং শোনার পর উত্তর

দেবার জন্য মুখ খুললাম, কিন্তু আমার মুখ দিয়ে কিছুই বের

হচ্ছিলো না। কোন একটা শক্তি যেন আমার গলা টিপে ধরেছিল। আমার মুখ

দিয়ে কোনও কথাই বের হচ্ছিলো না। অনেক চেষ্টা করার পর

বলে সক্ষম হলাম, “আল্লাহ হু লা ইলাহা হওাল গায়্যাম, লা তাকুজু

হসিনা তুন অয়ালা নউন, লাহু মাফিসামাওাতি ওয়ায়ামা ফিল

আরদে মানজাল লাজি ওয়াস্ফাও ইন্দাহু ইলা বেইজনি, ইয়ালামুনা

বেয়না এহদি হিম ওয়ামা কালফি হুম ওয়ালা ইউহিতুনা বি সেই

ইন মিনিল্মি হি ইলা বেমাশা, ওয়াসা কুরসি ইউহুস সামাওয়াতি

ওয়াল আরদে ওয়ালা ইউদু হু হিফজু হুমা ওয়া হুয়াল আলিউল

আজিমআয়াত-আল-কুরসিসুরাহ পড়ার পর হঠাত করে খেয়াল

করলাম সেই নয় ফিট লম্বা ছায়াটা আমাকে বলছে যে, “তুই এটা

কী করলি? আমি ভেবেছিলাম তুই কিছুই বলতে পারবি না আর

আমি তোর ক্ষতি করে দিতাম, আমাকে ডিস্টার্ব করে ডাকার

জন্য। এই সুরাহ পড়ার পর পৃথিবীতে কোনও জীনের ক্ষমতা নেই

কারো ক্ষতি করার। আমার মনটা তখন ভরে উঠলো। মনে হল

জীবনে কোনও একটা ভাল কাজ করেছি বলে আজ বেঁচে গেলাম। সেটা আমাকে বলল, “এটা কোনও ছেলে খেলা নয়। সবার সাধ্যের

মধ্যে নয় এটা। তুই আল্লাহর পবিত্র কালামের জন্য আজ বেঁচে

গেলি। কিন্তু ভবিষ্যতে সেটা নাও হতে পারে। যাই হোক এখন বল

তুই আমাকে ডেকেছিস কেন? আমার নিজের অনেক জানতে ইচ্ছে

করছে। আমি বললাম মাফ করো। আমি জীন দেখিনি জীবনে। তাই

দেখতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু এটা যে সত্যি হবে তা কখনই কল্পনা

করতে পারিনি। আমি যদি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করি তাহলে

কি আপনি তার উত্তর দিতে পারবেন?”তখন আমি যা জিজ্ঞেস করেছিলাম আর যে উত্তর পেয়েছি তা

এখনও পর্যন্ত একশ ভাগ সত্যি হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত হচ্ছে।

তারপ সে বলল আর কিছু জানতে চাস?” আমি বললাম অনেক

শুকরিয়া। আমাকে সালাম দিয়ে সে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। কিন্তু

ওই ঘটনার পর অনেক দিন আমার রাতে ঘুমই আসত না। আম্মু

বা আব্বুকে ছাড়া আমি ঘুমাতেই পারতাম না। রাতে ভয়ানক সব

স্বপ্ন দেখতাম। আমার জীবনে আমি অনেক প্যারানরমাল ঘটনা

দেখেছি। কি্তু এর চেয়ে বড় আর কোনও কিছু আমি দেখিনি।