আজ যে ঘটনাটা বলবো সেটা হচ্ছে একটি অজপাড়া গাঁয়ের গল্প। গল্পটি বেশ পুরোনো হলেও বাস্তব এটাই যে ভয়ানক সেই কাজগুলো এখনো প্রতিদিন ঘটে। প্রায় ১০ বছর তো হবেই। আমাদের এলাকার একটি গ্রামের নাম হচ্ছে দড়িপাড়া। বলে রাখা ভালো গ্রামটির কয়েক জায়গায় ঘন জঙ্গল।মুলত কাহীনিটা ঐ জঙ্গলকে ঘিড়েই। আমি সেদিন বাড়িতে, হঠাৎ শুনলাম দড়িপাড়া গ্রামের একজন মারা গেছেন।
কৌতুহল বশত আমি জানতে চাইলাম কিভাবে মারা গেলেন উনি। দাদী বলতে লাগলেন, যে লোকটি মারা গেছে এটা তার এলাকা নয়। তিনি মুলত এসেছিলেন তার মেয়ের বাড়িতে বেড়ানোর জন্য। তার বাড়ি থেকে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। ভ্যানে করে রওনা হলেন মেয়ের বাড়ির উদ্দ্যেশে।পথিমধ্যে ভ্যান ওয়ালা বললো, জঙ্গলটা খারাপ তাই সে আর যেতে পারবেনা। লোকটির আর কি করার তিনি ভ্যান থেকে নেমে হাটা শুরু করলেন। তিনি ভাবলেন ভ্যান ওয়ালা বোধ হয় ভুত বিশ্বাস করেন তাই আর যেতে চাইছিলো না। তিনি দেখলেন সন্ধ্যা নামতে আর দেরি নেই, মাগরিবের আজানও দেবে দেবে ভাব। তিনি ভাবলেন নামাজের তো দেরি হচ্ছে কি করা যায়? তিনি ভাবলেন, মেয়ের বাড়িতো অনেক দুর। রাস্তা দিয়ে গেলে নামাজ কাযা হবে তাই তিনি শর্টকাট রাস্তা খুজতে লাগলেন।
হঠাৎ দেখেন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা সোজা চলে গেছে আরেকটি বড় রাস্তার কাছে। তিনি চিন্তা করলেন এই রাস্তা ধরে গেলে যদি নামাজ পড়তে পাড়েন তাই তিনি হাতে টর্চ জালিয়ে হাটা শুরু করলেন। বলে রাখা ভালো জঙ্গলটি এত ঘন যে দিনের বেলায় সুর্যের আলোও ঠিকমত পড়েনা।তিনি এগোচ্ছেন কিছুক্ষন যাওয়ার পর কে জানি তার নাম ধরে ডাকলেন। তিনি ভাবলেন হয়তোবা বিয়াই সাহেব, কেননা কণ্ঠটা সেইরকমই প্রায়। তিনি ফিরে দেখেন কেউ নেই। তিনি একটু ভয় পেলেন।আবার হাটা শুরু করলেন। কণ্ঠটা এবার কর্কশ ভাষায় বলে উঠল,কি খবর কই যাচ্ছেন থামুন বলছি। লোকটি এবার একটু ভয়েই পেলেন তিনি ফিরে দেখেন কেউ নেই।আবার যখন সামনে ফিরতে যাবেন হঠাৎ,,,,,, হঠাৎ তার সামনে একজন সাদা রঙের জোব্বা পড়া দাড়িওয়ালা হুজুর দাড়িয়ে আছেন। তিনি এতটা ভয় পেয়েছিলেন যে হয়তো তিনি ভয়ে মরে যাবেন। হুজুর টি বলতে লাগলেন,তোকে না থামতে বলেছিলাম তুই থামলি না কেন,এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে। লোকটি ভয়ে বলতে লাগলো,কি শাস্তি?
হুজুর বললেন, চল মৃতটাকে মাটি দিবি। কবর খনন করা আছে, আমাদের একজন লোক কম ছিল।এখন তুই চল। বলতে না বলতে চারজন হুজুর একটা সাদা কাপড়ে লাশ জড়ানো একটা খাটিয়া নিয়ে আসলো। তারপর হুজুর বললেন চল।অগত্য পিছু যেতে বাধ্য হলেন লোকটি। যেতে যেতে একটি ঘন জায়গায় এসে পৌছিলেন। দেখেন সামনে একটা কবর আর চারিদিকে আলো জ্বলছে। তাকে হুজুর বললেন কবরের ভিতর নামতে। লোকটি ভয়ে ভয়ে কবরের ভিতর নামলেন।
লাশটি উপর থেকে দেওয়া হলো। লাশটি কবরে রাখতেই এক ঝটকা বাতাসে লাশের মুখ থেকে কাপড় সরে গেল।লোকটি যা দেখলেন তা দেখে তিনি মরো মরো অবস্থা। এটা কে? এটা তো তিনি নিজেই। এটা দেখে তিনি ভয়ে অসাড় হয়ে পড়লেন। ইতিমধ্যেই এশার নামাজের আজান হতে লাগলো। হুজুরটি চলে যাওয়ার আগে বললেন,এই কথা কাউকে না বলতে। যদি বলে সেদিনই সে মারা যাবে। আজান শেষ হওয়ার পর তিনি লক্ষ্য করলেন তিনি বড় রাস্তায় এসে পড়েছেন। তিনি হতভম্ব হলেন।তাহলে এতক্ষন যা হলো এটা কি? তিনি কোন কথা না বলে এক দৌড়ে মেয়ের বাড়ির সামনে এসে বেহুশ।দিন তিনেক পর তার হুশ ফিরলে তিনি সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন। এরপর মাঝরাতে তিনি মারা যান।